
Click here to Read English version of this article here (এই লেখাটি ইংরেজি পড়তে এখানে ক্লিক করুন)
ভূমিকা (Introduction)
IFRS 18 কী ও কেন? আমরা যারা ব্যবসা বা হিসাববিজ্ঞানের ছাত্র, তারা নিশ্চয়ই আর্থিক বিবরণী (Financial Statements) আর আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিবেদন মান (IFRS) সম্পর্কে জানি। IFRS হলো এমন কিছু নিয়ম, যা কোম্পানিগুলোকে আর্থিক তথ্য কীভাবে প্রকাশ করতে হবে, তা বলে দেয়। এর উদ্দেশ্য হলো, সব কোম্পানি যেন একই রকমভাবে হিসাব রাখে, যাতে তাদের তথ্য সহজে বোঝা যায় এবং তুলনা করা যায়।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডস বোর্ড (IASB) নতুন একটি স্ট্যান্ডার্ড চালু করেছে, যার নাম IFRS 18: Presentation and Disclosure in Financial Statements. এই নতুন স্ট্যান্ডার্ড আর্থিক প্রতিবেদন (Profit or Loss Statement or Income Statement) আরও সুসংগঠিত ও স্বচ্ছ করতে সহায়তা করবে। সহজ কথায়, এটি কোম্পানির আর্থিক পারফরম্যান্স (তারা কেমন লাভ বা লোকসান করছে) দেখানোর পদ্ধতিকে আরও স্বচ্ছ করবে।
এটি ২০২৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বাধ্যতামূলকভাবে প্রযোজ্য হবে, তবে চাইলে কোম্পানিগুলো এর আগেও এটি ব্যবহার করতে পারবে। IFRS 18, IAS 1 পরিবর্তে (replacement) আসছে এবং Profit or Loss Statement এর উপস্থাপনা ও তথ্য প্রকাশে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে।
১. IFRS 18 কেন গুরুত্বপূর্ণ?
IFRS 18-এর মূল উদ্দেশ্য হলো, লাভ-ক্ষতির বিবরণী (Profit or Loss Statement) এবং আর্থিক কর্মক্ষমতার অন্যান্য দিকগুলো আরও পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা এবং অন্যান্য ব্যবহারকারীরা একটি কোম্পানির আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবে। এটি বর্তমানে ব্যবহৃত IAS 1 (Presentation of Financial Statements) এর পরিবর্তে আসবে।
২. IFRS 18 এর প্রধান পরিবর্তন কী কী?
এই নতুন স্ট্যান্ডার্ড কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, যা আর্থিক প্রতিবেদনের পদ্ধতিকে প্রভাবিত করবে:
২.১ বিবরণীর কাঠামোতে পরিবর্তন:
- আগে কোম্পানিগুলো তাদের ইনকাম স্টেটমেন্টে কিছু সাবটোটাল (subtotals) নিজেদের ইচ্ছামতো দিতো, যেমন অপারেটিং প্রফিট (Operating Profit)। IFRS 18 এ, এই সাবটোটাল গুলো বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে। যেমন, পরিচালন মুনাফা বা ক্ষতি (Operating Profit or Loss), পরিচালন কার্যক্রম থেকে লাভ বা ক্ষতি (Profit or Loss from Operating Activities), এবং বিনিয়োগ ও অর্থায়ন কার্যক্রম থেকে লাভ বা ক্ষতি (Profit or Loss from Investing and Financing Activities)। এর ফলে এক কোম্পানির সাথে অন্য কোম্পানির তুলনা করা অনেক সহজ হবে।
২.২ নিয়ম আর সিদ্ধান্তের স্পষ্টতা:
- নতুন এই নিয়ম কোম্পানিগুলোকে তাদের পারফরম্যান্স সম্পর্কিত তথ্য দেখানোর জন্য কিছু নির্দিষ্ট নীতি মেনে চলতে উৎসাহিত করবে। এর ফলে, সব কোম্পানি একই ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করবে এবং তাদের রিপোর্টগুলো আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
২.৩ বিনিয়োগ ও অর্থায়ন আলাদাভাবে দেখানো:
- IFRS 18 এ, লাভ-ক্ষতির বিবরণীতে বিনিয়োগ (Investing) এবং অর্থায়ন (Financing) থেকে আসা আয় ও খরচগুলোকে পরিষ্কারভাবে আলাদা করে দেখানো হবে। এটা ব্যবহারকারীদের জন্য আরও বিস্তারিত তথ্য দেবে, যা তাদের সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।
২.৪ অস্বাভাবিক লেনদেনের ক্ষেত্রে আরও কঠোর নির্দেশনা
- নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যেসব আয় বা খরচ অস্বাভাবিক (unusual in nature) অথবা পরিমাণে অনেক বড় (unusual in amount), সেগুলোকে এখন থেকে আলাদাভাবে দেখাতে হবে। এর মানে হলো, যদি কোনো কোম্পানির এমন অপ্রত্যাশিত কোনো আয় বা বড় খরচ হয় যা তাদের স্বাভাবিক ব্যবসার অংশ নয়, তাহলে সেটা আর্থিক বিবরণীতে স্পষ্ট করে উল্লেখ করতে হবে। এতে আর্থিক তথ্যের স্বচ্ছতা আরও বাড়বে।
২.৫ ইনকাম স্টেটমেন্ট এবং ক্যাশ ফ্লো স্টেটমেন্টের মধ্যে সামঞ্জস্য বৃদ্ধি:
- নতুন IFRS 18 অনুযায়ী, আয় ও ব্যয়কে সুনির্দিষ্টভাবে পরিচালন (operating), বিনিয়োগ (investing) এবং অর্থায়ন (financing) কার্যক্রমে ভাগ করে দেখাতে হবে। এগুলো ক্যাশ ফ্লো স্টেটমেন্টের (cash flow statement) শ্রেণিবিভাগের মতোই। এই মিল থাকার কারণে লাভজনকতা (profitability) (যা আমরা ইনকাম স্টেটমেন্টে দেখি) এবং নগদ প্রবাহ (liquidity) (যা ক্যাশ ফ্লো স্টেটমেন্টে থাকে) এর মধ্যে পার্থক্য কমে আসবে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা একটি কোম্পানির আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে আরও পরিষ্কার এবং সমন্বিত ধারণা পাবেন।
৩. IFRS 18 এর উদাহরণ
৩.১ উদাহরণ ১: একটি উৎপাদনকারী (Manufacturing) প্রতিষ্ঠানের ইনকাম স্টেটমেন্টের ফরম্যাট:
- IFRS 18 এ, একটি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের (Manufacturing) ইনকাম স্টেটমেন্ট (Income Statement) কেমন দেখতে হতে পারে, এর উদাহরণ:
ইনকাম স্টেটমেন্ট (Extract) | $ in millions | ক্যাটাগরি |
রেভিনিউ | ৫০০ | পরিচালন (Operating) |
কস্ট অফ সেলস | (৩০০) | |
গ্রস প্রফিট | ২০০ | |
অন্যান্য পরিচালন আয় | – | |
পরিচালন ব্যয়: | – | |
– সেলিং ও মার্কেটিং | (৫০) | |
– রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট | (২০) | |
– অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কস্টস | (৩০) | |
পরিচালন মুনাফা (New Subtotal) | ১০০ | |
বিনিয়োগ: | বিনিয়োগ (Investing) | |
– ডিভিডেন্ড ইনকাম | 10 | |
– সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও জয়েন্ট ভেঞ্চার থেকে মুনাফা ও বিক্রয় লাভ | – | |
– সরঞ্জাম বিক্রয় থেকে ক্ষতি | (৫) | |
ফিনান্সিং ও ট্যাক্সের পূর্বের মুনাফা | ১০৫ | |
ফিনান্সিং খরচ | ফিনান্সিং (Financing) | |
– ঋণ ও লিজের সুদ খরচ | (১৫) | |
– পেনশন দায় ও প্রভিশনের সুদ খরচ | – | |
ট্যাক্সের পূর্বের মুনাফা | ৯০ | |
ইনকাম ট্যাক্স এক্সপেন্স | (২০) | ইনকাম ট্যাক্স (Income Taxes) |
চলমান কার্যক্রম থেকে মুনাফা | ৭০ | |
বন্ধ হয়ে যাওয়া কার্যক্রমে লোকসান | – | বন্ধ কার্যক্রম |
মোট মুনাফা (Profit) | ৭০ |
নতুন নিয়ম অনুযায়ী পরিচালন (operating), বিনিয়োগ (investigate) এবং অর্থায়ন (financing) সংক্রান্ত কার্যক্রমগুলো আলাদা করে দেখানো হয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি কোম্পানির পারফরম্যান্স বোঝা আরও সহজ হবে।
৩.২ উদাহরণ ২: একটি বীমা কোম্পানির সংশোধিত ইনকাম স্টেটমেন্টের ফরম্যাট:
- IFRS 18 অনুযায়ী একটি বীমা কোম্পানির ইনকাম স্টেটমেন্ট (Income Statement) কেমন হতে পারে, তার একটি সম্ভাব্য রূপ নিচে দেওয়া হলো:
ইনকাম স্টেটমেন্ট (IFRS 18 ফরম্যাট) | $ in millions | ক্যাটাগরি |
ইনস্যুরেন্স রেভিনিউ | ১,০০০ | পরিচালন মুনাফা (Operating Profit) |
ইনস্যুরেন্স সার্ভিস এক্সপেন্সেস: | ||
– ক্লেইমস ও বেনিফিট | (৬০০) | |
– অ্যাকুইজিশন কস্টস | (১০০) | |
– পরিচালন ব্যয় | (৫০) | |
অস্বাভাবিক ঘটনা: বড় ধরনের ক্ষতির জন্য ব্যয় | (৪০) | |
ইনস্যুরেন্স সার্ভিস রেজাল্ট | ২১০ | |
ইনভেস্টমেন্ট ইনকাম (পরিচালন): | ||
– নিট ইনভেস্টমেন্ট ইনকাম (পলিসিহোল্ডার ফান্ড) | ১৫০ | |
পরিচালন মুনাফা (New Subtotal) | ৩৬০ | |
বিনিয়োগ কার্যক্রম | বিনিয়োগ কার্যক্রম (Investing Activities) | |
– বিনিয়োগ থেকে লাভ (অতিরিক্ত আয়) | ৩০ | |
ফিনান্সিং ও ট্যাক্সের পূর্বের মুনাফা | ৩৯০ | |
অর্থায়ন খরচ: | অর্থায়ন খরচ (Financing Costs) | |
– সুদ খরচ | (২০) | |
ট্যাক্সের পূর্বের মুনাফা | ৩৭০ | |
ইনকাম ট্যাক্স এক্সপেন্স | (৬০) | ইনকাম ট্যাক্স (Income Taxes) |
নিট মুনাফা | ৩১০ |
৩.৩ উদাহরণ ৩: ব্যাংকগুলোর জন্য সংশোধিত ইনকাম স্টেটমেন্টের ফরম্যাট
IFRS 18 নিয়ম অনুযায়ী, একটি ব্যাংকের ইনকাম স্টেটমেন্ট (Income Statement) কেমন দেখতে হতে পারে, তা নিচে দেওয়া হলো:
ব্যাংকের নতুন IFRS 18 ইনকাম স্টেটমেন্ট | ||
ইনকাম স্টেটমেন্ট (IFRS 18 ফরম্যাট) | $ in millions | ক্যাটাগরি |
পরিচালন কার্যক্রম | পরিচালন মুনাফা (Operating Profit) | |
– নিট সুদ আয় | ২,০০০ | |
– নিট ফি ও কমিশন আয় | ৫০০ | |
– ট্রেডিং আয় | ৩০০ | |
মোট পরিচালন আয় | ২,৮০০ | |
পরিচালন ব্যয় | ||
– স্টাফ খরচ | (৮০০) | |
– টেকনোলজি ও অবকাঠামো | (৩০০) | |
– অন্যান্য ওভারহেডস | (১০০) | |
অস্বাভাবিক ঘটনা: পুনর্গঠন খরচ | (৫০) | |
পরিচালন মুনাফা (New Subtotal) | ১,৫৫০ | |
বিনিয়োগ কার্যক্রম | বিনিয়োগ (Investing) | |
– সিকিউরিটিজ বিক্রয় থেকে লাভ | ১০০ | |
ফিনান্সিং ও ট্যাক্সের পূর্বের মুনাফা | ১,৬৫০ | |
অর্থায়ন খরচ | অর্থায়ন (Financing) | |
– সুদ খরচ (ঋণ) | (১৫০) | |
ট্যাক্সের পূর্বের মুনাফা | ১,৫০০ | |
ইনকাম ট্যাক্স এক্সপেন্স | (৩০০) | ইনকাম ট্যাক্স (Income Taxes) |
নিট মুনাফা | ১,২০০ |
৪. IFRS 18 এর ব্যবসার উপর প্রভাব
IFRS 18 ব্যবসার উপর কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে, যা নিচে আলোচনা করা হলো:
- বাস্তবায়ন খরচ: IFRS 18-এর নতুন শ্রেণিবিভাগ নিয়মগুলো মেনে চলার জন্য কোম্পানিগুলোকে হয়তো তাদের বর্তমান রিপোর্টিং সিস্টেমে পরিবর্তন আনতে হবে। এর জন্য সফটওয়্যার আপডেট করা, কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া বা নতুন সিস্টেম স্থাপন করার মতো কিছু খরচ হতে পারে। তবে, দীর্ঘমেয়াদে এটি আর্থিক প্রতিবেদনের মান উন্নত করতে সাহায্য করবে।
- তুলনা করার সুবিধা: IFRS 18 অনুযায়ী, নির্দিষ্ট কিছু সাবটোটাল যেমন পরিচালন মুনাফা (operating profit) বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থাপন করতে হবে। ফলে বিভিন্ন কোম্পানি—এমনকি একই শিল্পের কোম্পানিগুলোর মধ্যেও—আর্থিক পারফরম্যান্স তুলনা বিনিয়োগকারীদের জন্য অনেক সহজ হবে। পূর্বে যেখানে প্রতিটি কোম্পানি নিজেদের মতো করে বিভিন্ন সাবটোটাল উপস্থাপন করত, এখন নির্দিষ্ট কাঠামো থাকার ফলে এই তুলনা অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য ও সঠিক হবে।
- আরও বেশি তথ্য প্রকাশ: নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন কোম্পানিগুলোকে তাদের ব্যবহৃত নন-IFRS মেজারগুলোর পেছনের যুক্তি ব্যাখ্যা করতে হবে—যেগুলো IFRS কাঠামোর বাইরে নিজস্ব পদ্ধতিতে নিরূপণ করা হয়। পাশাপাশি, কোনো অস্বাভাবিক আয় বা ব্যয়ের ক্ষেত্রে তার বিস্তারিত কারণও স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। এর ফলে আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা বাড়বে এবং বিনিয়োগকারীরা আরও গভীর ও কার্যকর তথ্য পাবে।
৫. IAS 1 বনাম IFRS 18: পার্থক্য
এখানে IAS 1 এবং IFRS 18 এর মধ্যে ইনকাম স্টেটমেন্টের কাঠামোগত পার্থক্যগুলো তুলে ধরা হলো:
IAS 1 | IFRS 18 (নতুন) |
---|---|
আয়/ব্যয়কে পরিচালন (operating), বিনিয়োগ (investing), বা অর্থায়ন (financing) — এই ধরনের কোনো বাধ্যতামূলক ক্যাটাগরিতে ভাগ করার নিয়ম নেই। | আয়/ব্যয়কে তিনটি নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হবে: ১. পরিচালন (Operating) ২. বিনিয়োগ (Investing) ৩. অর্থায়ন (Financing) |
সাবটোটাল (subtotals) দেখানোর ক্ষেত্রে নমনীয়তা (flexibility) ছিল (যেমন, কোম্পানিগুলো তাদের নিজস্ব “পরিচালন মুনাফা” কিভাবে দেখাবে, তা নির্ধারণ করতে পারত)। | মানসম্মত সাবটোটাল (Standardized subtotals) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে (যেমন, “পরিচালন মুনাফা” এখন পরিষ্কারভাবে সংজ্ঞায়িত হতে হবে)। |
অস্বাভাবিক লেনদেনগুলো (unusual items) অন্যান্য সাধারণ লেনদেনের মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারত। | অস্বাভাবিক লেনদেনগুলো (unusual items) যদি গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে সেগুলোকে অবশ্যই আলাদাভাবে দেখাতে হবে। |
নন-IFRS মেজার (যেমন, EBITDA) ব্যবহারের ক্ষেত্রে সীমিত নির্দেশনা (Limited guidance) ছিল। | ম্যানেজমেন্ট-পারফরম্যান্স মেজার (MPMs) ব্যবহারের ক্ষেত্রে কঠোর সামঞ্জস্য বিধান (Strict reconciliation required) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। |
৬. IFRS 18 অনুযায়ী অতিরিক্ত তথ্য প্রকাশ (Additional Disclosures)
IFRS 18 কিছু অতিরিক্ত তথ্য প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক করেছে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কোম্পানিগুলো যদি IFRS ব্যতীত, অন্যান্য কোনো পরিমাপ (non-IFRS measures) ব্যবহার করে, তাহলে সেগুলোর একটি বিস্তারিত হিসাব বা সামঞ্জস্য (reconciliation) দেখাতে হবে।
উদাহরণ: নন-IFRS মেজারের সামঞ্জস্য (যেমন, EBITDA)
নিচে অ্যাডজাস্টেড EBITDA-এর একটি সামঞ্জস্যের উদাহরণ দেওয়া হলো:
অ্যাডজাস্টেড EBITDA-এর সামঞ্জস্য (পরিমাণ মিলিয়ন ডলারে)
বিবরণ | পরিমাণ |
---|---|
নিট মুনাফা (IFRS) (Net Profit (IFRS)) | ৬৮ |
(+) ট্যাক্স খরচ (Tax Expense) | ২০ |
(+) সুদ খরচ (Interest Expense) | ১৫ |
(+) অবচয় ও অবলোপন (Depreciation & Amortization) | ২৫ |
EBITDA | ১২৮ |
অ্যাডজাস্টমেন্ট (পুনর্গঠন) (Adjustments (Restructuring)) | ১২ |
অ্যাডজাস্টেড EBITDA (Adjusted EBITDA) | ১৪০ |
IFRS 18 এর প্রয়োজনীয়তা:
IFRS 18 এর নিয়ম অনুযায়ী, কোম্পানিগুলোকে এখন পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে, কীভাবে নন-IFRS মেজার (Non-IFRS measures), যেমন EBITDA, হিসাব করেছে। এর পাশাপাশি, এই নন-IFRS মেজারগুলো IFRS অনুযায়ী হিসাব করা figure এর সাথে কীভাবে মিলে যায় (reconcile হয়), সেটাও দেখাতে হবে। এর উদ্দেশ্য হলো, ব্যবহারকারীরা যেন কোম্পানির আর্থিক পারফরম্যান্স সম্পর্কে একটি সম্পূর্ণ ও সঠিক ধারণা পায়, এবং তথ্যের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পায়।
উপসংহার (Conclusion)
IFRS 18 নিয়মটি IAS 1 এর তুলনায় আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে একটি আরও সুসংগঠিত (more structured) এবং স্বচ্ছ (transparent) পদ্ধতি নিয়ে এসেছে। কোম্পানিগুলোকে এখন কিছু নির্দিষ্ট বিষয় মেনে চলতে হবে:
- ✔ আয়/ব্যয়কে ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভাগ করতে হবে: এখন থেকে আয় ও ব্যয়কে পরিচালন (operating), বিনিয়োগ (investing) এবং অর্থায়ন (financing) — এই তিনটি নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে ভাগ করে দেখাতে হবে।
- ✔ অস্বাভাবিক লেনদেনগুলো আলাদাভাবে প্রকাশ করতে হবে: যদি কোনো অস্বাভাবিক আয় বা খরচ থাকে, তবে সেগুলোকে এখন স্পষ্টভাবে আলাদা করে দেখাতে হবে।
- ✔ নন-IFRS মেজারগুলোর সামঞ্জস্য দেখাতে হবে: EBITDA-এর মতো যেসব মেজার IFRS অনুযায়ী নয়, সেগুলোর হিসাব এবং IFRS সংখ্যার সাথে তার সামঞ্জস্য (reconciliation) দেখাতে হবে।
এই পরিবর্তনের ফলে কোম্পানিগুলোর মধ্যে তুলনা করা সহজ হবে (enhances comparability) এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে (investor confidence)। তবে, এই নতুন নিয়মগুলো মেনে চলার জন্য হয়তো কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির সিস্টেমে কিছু পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে।
Read more: IAS 16: Property, Plant & Equipment
This article is written by Monir Bhuiyan, a member of ACCA (Association of Chartered Certified Accountants) and ICAB (Institute of Chartered Accountants of Bangladesh).